দৈনিক প্রত্যয় প্রতিবেদকঃ করোনা পরীক্ষার নামে রোগীদের থেকে অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহ ও জাল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে বুকিং বিডি ও হেলথ কেয়ার নামের দুই প্রতিষ্ঠানের মালিক হুমায়ন কবীর(৩৪), তানজিনা পাটোয়ারী (২৮), আরিফুল চৌধুরী(৪৫)সহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ জুন) সকালে বিমানবন্দর থানা এলাকার আশকোনার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হুমায়ন কবীর ও তানজিনাকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। পরে তাদের দেয়া তথ্যে পুলিশ গুলশান-২ এর কনফিডেন্স টাওয়ারের ১১ তলা, ১৪ তলা ও ১৫ তলায় জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নামের প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে আরিফুল চৌধুরীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা অর্থের বিনিময়ে বাসায় গিয়ে করোনা রোগীর স্যাম্পল সংগ্রহ করে পরীক্ষার ফলাফল জানিয়ে দেয়। বাসায় গিয়ে স্যাম্পল কালেকশন করার পর তা আর পরীক্ষা করা হয় না। সংগ্রহকৃত স্যাম্পল ফেলে দিয়ে বানোয়াট মিথ্যা রিপোর্ট রোগীকে দিতো। নেই কোন ল্যাব। কম্পিউটারে ফলাফল লিখে ই-মেইলে তা রোগীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। স্যাম্পল সংগ্রহের সময় রোগীর বাহ্যিক উপসর্গ দেখে একটা ধারণা থেকে ফলাফল তৈরি করে। করোনার বাহ্যিক উপসর্গ দেখা দিলে, সেক্ষেত্রে তার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ উল্লেখ করা হয়। বাসায় গিয়ে স্যাম্পল সংগহ করতে জন প্রতি ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা তারা নিয়েছেন।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন উর রশিদ বলেন, এই চক্রটি আগে জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নামের প্রতিষ্ঠানে বুথের মাধ্যমে করোনা রোগীর স্যাম্পল সংগ্রহের চাকরি করত। এই প্রতিষ্ঠানটি আইইডিসিআর কর্তৃক করোনা রোগীর স্যাম্পল সংগ্রহের জন্য অনুমোদিত। গত ১২ এপ্রিল তারা এই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দেয়। পরে তারা অনলাইনে ওই প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ব্যবহার করে বুকিং বিডি ও হেলথ কেয়ার নামে দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় যে, তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা রোগীর স্যাম্পল সংগহ করে নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয়। তাদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে কয়েকজন কয়েকজন ভূক্তভোগী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের সহকারী কমিশনার মাহমুদ খান বলেন, মঙ্গলবার সকালে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গুলশানের কনফিডেন্স টাওয়ারের অফিসে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার জব্দ করা হয়। কম্পিউটারে জাল রিপোর্ট পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত তারা ৩৭ জনের করোনা স্যাম্পল সংগ্রহ করে মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছেন।